💞প্রথম ভালেবাসার অনুভূতি💞

লেখিকাঃ🌿হ্যাপী🌿

পার্টঃ১২


বাবা শাহীনকে বাসায় আসতে বলে,,

শাহীন বাবার কথামতো বাসয় আসে,,


আসসালামু আলাইকুম আংকেল,,

ওয়ালাইকুম আসসালাম,,

ভালো আছেন,

আলহামদুলিল্লাহ,, তুমি(গম্ভীর ভাবে)

তার মধ্যে আমি আর আম্মু আসি,,,

আংকেল আমাকে কেনো আসতে বলেছেন?

আজ আমি তোমাকে কিছু কথা বলতে চাই,,,হয়তো শুনতে তোমার খারাপ লাগবে,,কিন্তু আমি আমার মেয়ের কথা চিন্তা করে কথা গুলো আজ তোমাকে বলতে চাই,,

জী আংকেল বলেন,,কোনো সমস্যা নেই


তোমার বাবার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো,,আর তোমাদের অবস্থা যদি আগের মতো থাকতো,,তাহলে আমার কোনো সমস্যা ছিলো না,,এখন তোমার এই অল্প বেতনের সংসারে আমি আমার মেয়ে কে কি করে পাঠাবো বলো,,,


বাবা আমার কোনো সমস্যা হবে না,,,


তুমি চুপ করো,, অভাবের কী বুঝ তুমি,,ছোটবেলা থেকে কোনো অভাব দেয় নি,,তাই বুঝ না,,অভাব ঘরে আসলে,,ভালোবাসা নামক ভুত মাথায় থাকে না,,,(রেগে)

এতোক্ষণ শাহীন মাথা নিচু করে কথা গুলো শুনছিলো,,মাথা তুলে,আংকেল এখন আপনি বলেন কী করবো আমরা,, 

তোমার কাছে দুইটা অপশন আছে,,

বলেন আংকেল আপনার অপশন গুলো,,

আমার প্রথম অপশন,,

দেখো আমার আমার একটাই মেয়ে আর আমাদের যা আছে সবই তো ওর,,,আমি চাই তুমি বিয়ের পর আমাদের বাসায় থাকো,,তুমি চাইলে তোমার মাকে ও সাথে আনতে পারো,,,তুমি আমার ব্যবসার হাল ধরো,

বাবা কী বলছো এইসব(চিৎকার করে)

তুমি চুপ থাকো,,আংকেল আপনার দ্বিতীয় অপশন বলুন

আমার দ্বিতীয় অপশন হলো,,

তুমি আমার মেয়ের জীবন থেকে সরে যাও,,ওর জন্য অনেক ভালো ভালে বিয়ে আসছ বাট তুমি ওর জীবনে থাকলে কখনো বিয়ে করতে রাজি থাকবে না

মা বাবা এইসব কী বলছে,,তুমি চুপ করে আছো কেনো,,

এতক্ষণ কোনো কথা বলি নি,কারন এই সিদ্ধান্ত আমি আর তোমার বাবা মিলে নিয়েছি,,আমরা তোমার খারাপ চাই না,,,তুমি আমাদের কোন অপশনে রাজি,,,শাহীন,, 

শাহীনের চোখ দুটি লাল হয়ে গেছে,, মনে হচ্ছে চোখ থেকে এখনি রক্ত বের হয়ে আসবে,,,শাহীন একবার ইমুর দিকে তাকিয়ে,,এবার আংকেলের দিকে তাকায়,,,

আংকেল,,,আমার বাবা-মা আমাকে এই শিক্ষা দেয় নি বিয়ে করে,,শশুরের টাকায় নিজেকে বিক্রি করে দিবো,,আর আমার মা মরে গেলেও ছেলের শশুর বাড়িতে থাকবে না,,আর আমি এখন যেই জব টা করি তা দিয়ে আমাদের খুব ভালো ভাবেই চলে,,

একটু থেমে,,

আপনি ইমুর বাবা আপনি সবসময় ইমুর জন্য বেস্ট টাই খুজবেন,,,এটাই স্বাভাবিক আপনারা না চাইলে আমি ইমুর সাথে কেনো সম্পর্ক রাখবো না,,,আমিও চাই ইমু জীবনে অনেক সুখী হোক,,,

শাহীন কী বলছো তুমি (কান্না করে)

ইমুর কথায় কোনো উওর না দিয়ে,

আংকেল আমি এই বাসায় থেকে বের হওয়ার পর ইমুর সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দিবো,,কিন্তু তার আগে একবারের জন্য আমি ইমুর সাথে আলাদা

কথা বলতে চাই,,

ইমুর বাবা-মা দুজনেই দুজনের দিকে তাকায় 

ভয় পাবেন না,,আমি এমন কিছু বলবো না বা করবো না যাতে করে আপনাদের অসম্মান হয়,,, ঠিক আছে যাও,,ইমু শাহীনকে তোমার রুমে নিয়ে যাও,,(ইমুর আম্মু)

ইমু কান্না করতে করতে শাহীনে নিজের রুমে নিয়ে যায়

ইমু দরজাটা বন্ধ করে দৌড়ে এসে শাহীন কে জরিয়ে ধরে কান্না করতে থাকে,,শাহীন আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না,, প্লিজ আমাকে তোমার কাছে নিয়ে যাও,,আমার কোনো কিছু চাই না শুধু তোমাকে চাই,,খুব ভালেবাসি তোমাকে শাহীন,,

শাহীন ইমুকে ধরছে না শুধু নিরবে কান্না করে যাচ্ছে,,(হয়তো ছেলে বলেই কান্না করতে পারছে না,,ওর চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে,, ইমু আমার কলিজা,, ওকে ছাড়া আমি বাঁচবো না,,আমার থেকে ইমুকে আলাদা করো না,,কিন্তু আজ বাস্তবতার কাছে শাহীনের ভালোবাসা হেরে গেছে)

চোখের পানি মুছে ইমুকে বসালো,,ইমু আমি তোমাকে এখন যেই কথা গুলো বলবো,তুমি মন দিয়ে শুনবে,

ইমু মাথা নাড়লো,,

পৃথিবীতে কোনো বাবা-মা তার সন্তানের জন্য খারাপ চায় না,,তোমার বাবা-মা যা বলছে তোমার ভালোর জন্য বলছে তাই আমাদের উচিত তাদের কথা শুনা,,

আমি কিছু শুনতে চাই না,,আমরা পালিয়ে যাবো,,আমি শুধু তোমাকে চাই শাহীন,

বাট আমি তোমাকে চাই না,,,(শক্ত গলায়)

কী....(অবাক হয়ে)

হুম আমি তোমাকে চাই না, আজকের পর থেকে তুমি আমার সাথে কোনো যোগাযোগ করবে না,,আর তুমি যদি সত্যি আমাকে ভালোবেসে থাকো,, তাহলে,,নিজের কোনে ক্ষতি করবে না আর তোমার বাবা-মার কথামতো বিয়ে করে নিবে,,,

ইমুর মুখে কোনো কথা নেই,,,

চলো বাহিরে এতোটাইম নিলে তোমার বাবা-মা খারাপ ভাববে,,(আসলে শাহীন নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারছে না,,তাই যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব এখান থেকে যেতে চায়)

ইমুর কোনো রেসপন্স নেই,,তাই শাহীন ইমুর কপালে,,আলতো করে চুমো দিয়ে বলে,আমাদের ভাগ্যে নেই দুজনে একসাথে থাকা,,,


তারপর ইমুকে রেখে চলে আসে নিচে,,নিচে সবাইকে বিদায় দিয়ে বের হয়ে যায়,,যাওয়ার আগে একবার উপরে তাকায়,,ইমুকে শেষ বারের মতো দেখার জন্য,কিন্তু দেখতে পেলো না,,,তাই নিরাশ হয়ে বের হয়ে গেলো,, 

ঐদিকে 

ইমুর কান্না যেন থামছে না,,শাহীনকে ছাড়া বাঁচার কথা সে কল্পনা ও করতে পারে না,,,

কথাগুলো হ্যাপী কে বলতে অনেক কান্না করেছে,,


সবশুনে হ্যাপী ও নিজেকে ঠিক রাখতে পারে নি,,,নিজেও কান্না করছে,,এতকিছু হয়ে গেলো তুই আমাকে কিছু জানালি না,,

আমি কাল তোদের বাসায় যাবো,,আমি থাকতে এতোবড় ক্ষতি হতে দিবো না,,,আমি কথা বলবো আংকেল আন্টির সাথে,,,

কোনো লাভ নেই,,তুই আসলে তোকে অপমান করে দিবে আমি অনেক বুঝিয়েছি,,আমাকে বলেছে তোর সাথে যাতে আমি কোনো যোগাযোগ না রাখি,,

হ্যাপী আমি কী করে শাহীনকে ভুলবো বল,,আর বাবা বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে,,কাল আমার বিয়ে,,(কান্না করতে করতে)

এতো তাড়াতারি,,,

হুম,,,আমার একটা কথা রাখবি,,

বল,,

শাহীনকে দেখে রাখিস আমি জানি ও খুব বেশি কষ্টে আছে,,ও যে আমাকে আমার থেকেও বেশি ভালোবাসে,,(দুজনেই কান্না করছ)


চলবে,,,