#বহুরূপী
#পর্ব_০২
লেখা- নাহিদ হাসান নিবিড়
অহনাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে সোজা চায়ের দোকানে গিয়ে বসলাম। প্রচণ্ড উৎকণ্ঠা কাজ করছে। ভয় ভয় অনুভূত হচ্ছে। ইচ্ছা হচ্ছে এই মুহুর্তে কুরিয়ারের ব্যাগ খুলে ভেতরে কি আছে দেখে ফেলি কিন্তু সাহসে কুলাচ্ছে না। আমি নিশ্চিত তানিয়া নামের মেয়েটা বড় ধরনের গণ্ডগোল পাকিয়েছে। বিশ্রী প্রকৃতির ছবি পাঠাবে বলেছিল। সেরকমক কিছুই পাঠিয়েছে মনে হচ্ছে। কি চায় সে? এরকম করছে কেন? সে চাচ্ছে অহনার সাথে আমার বিয়েটা ভেঙে যাক, কিন্তু কেন? নিজেকে লুকিয়ে রাখার কি মানে?
ভেবেছিলাম চায়ের দোকানে বসে এক কাপ চা খাবো, খেতে পারলাম না৷ খুবই অস্বস্থি লাগছে। মাথার ভেতরটা টনটন করছে। উবার কল করে দ্রুত বাড়ি ফিরলাম।
বাসায় ঢুকতে মেন গেটের সামনে বাবার সাথে দেখা। আমার দিকে তাকিয়ে বাবা বললেন,
"কিরে কি হয়েছে? মুখটা এমন কালো করে রেখেছিস কেন?"
আমি স্বাভাবিক গলায় বললাম,
"বাবা ক্লান্ত লাগছে খুব। কিছু বলবে?"
--"বেয়ান সাহেব ফোন ধরতেছে না কেন? কতবার ফোন করলাম ফোন ধরতেছে না।"
বাবার কথা শুনে আমার বুকের ভেতরটা ধক করে উঠল, একবার ইচ্ছা হলো বাবাকে সব খুলে বলি। এই ঝামেলা আর সহ্য হচ্ছে না। নিজেকে সামলে বললাম,
"ব্যাস্ত আছেন বোধহয়। পরে ফোন দিয়ো।"
মা এই কদিনে মোটামুটি স্বাভাবিক হয়েছেন। তবে আমার ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছে না। আমি আমার ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিয়ে কুরিয়ারের ব্যাগ খুললাম।
ব্যাগ থেকে প্রথমেই কতগুলো ছবি বের হলো। ছবি দেখে হতভম্ব হয়ে গেলাম। প্রত্যেকটা ছবিতেই আমি এবং আমার সাথে একজন মেয়ে আছে। অশ্লীলতার চরম সীমা অতিক্রম করেছে। কারও গায়ে জামা-কাপড় নেই। আমাকে স্পষ্ট বোঝা গেলেও, মেয়ের চেহারা ঠিকমতো বোঝা যাচ্ছে। প্রত্যেকটা ছবির একই ব্যাপার, আমাকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে কিন্তু মেয়েকে বোঝা যাচ্ছে না, ব্লার ফিল্টার ব্যবহার করা হয়েছে। কি সুন্দর ফটোশপের নিখুঁত কাজ! যাদের ফটোশপ সম্পর্কে ধারণা নাই, তাদের পক্ষে ছবির মূল ব্যাপার বোঝা সম্ভব না। আমার ছবিগুলো সংগ্রহ করে কাট-ছাট করে অন্য ছবিতে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছবি রেখে চিঠি বের করলাম। চিঠিতে লেখা-
প্রিয় অহনা,
আশা করছি ভাল আছো। কিছুদিনের মধ্যে নিবিড়ের সাথে তোমার বিয়ে। ভাবছ আমি কে? কেন তোমাকে ছবি পাঠালাম? সরাসরি বলি।
নিবিড়ের সাথে আমার বিয়ে হয়েছিল ২০১৫সালের ২২শে ফেব্রুয়ারী। আমাদের বিয়ের কোন কাগজপত্র নেই, সাক্ষী নেই, মৌখিক ভাবে বিয়ে হয়েছে, কথা ছিল পরবর্তীতে পারিবারিকভাবে বিয়ে হবে কিন্তু দুজনের মধ্যে গড়মিল লেগে গেল।
সুমনের সাথে দীর্ঘ একবছর প্রেম করে সুমনকে বাদ দিয়ে নিবিড়কে বিয়ে করছ। কয়দিন পরই তোমাদের বিয়ে, এ-নিয়ে আমার কোন সমস্যা নেই। আমার সমস্যা হচ্ছে, তোমার সাথে বিয়ে হবার আগে নিবিড়কে অবশ্যই আমাকে ডিভোর্স করতে হবে। ভাবছ, নিবিড়কে না বলে তোমাকে বলছি কেন? নিবিড়কে বলেছি, সে কোন স্টেপ নেয়নি৷ তোমাদের কাছে হয়তো এসব কোন ব্যাপার না, কিন্তু আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার।
ছবিগুলো পাঠানোর জন্য দুঃখিত। একান্ত বাধ্য হয়ে ছবিগুলো পাঠিয়েছি। আশা করছি নিবিড়কে বিয়ের আগে আমাকে ডিভোর্স করতে বলবে৷ তোমাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক।
চিঠি পড়া শেষ করে অহনাকে ফোন করলাম। পরপর দুবার লাইন কেটে দিয়ে অহনা ফোন বন্ধ করে রাখল।
আমি বারান্দায় গিয়ে বসলাম। বাড়ির চারপাশে লাইটিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। বাতিগুলো জ্বেলে রাখা হয়েছে। রং-বেরঙের ছোট ছোট বাতিগুলো জ্বলজ্বল করছে, একবার জ্বলছে একবার নিভছে।
অহনাকে আরও দুবার ফোন করলাম, সে ফোন এখনো খোলেনি। আমি একটা সিগারেট জ্বেলে চুপচাপ বসে আছি, মাথাটা কাজ করছে না। অহনার সাথে কথা বলা প্রয়োজন। যে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে সে শুধু আমারই পরিচিত না, অহনারও পরিচিত।
বারান্দা থেকে বের হয়ে নিচে গেলাম। গেটের সামনে যেতেই ফিরোজ ভাই ফোন করলেন। আমি ফোন ধরতেই ফিরোজ ভাই বললেন,
--"নিবিড় ভাই কোথায় আছেন?"
--"বাসায় ভাই, কেন?"
--"আমি আপনাদের এলাকাতেই ছিলাম, সেজন্য ফোন দিলাম, ফ্রী আছেন নাকি?"
--"জ্বী ভাই ফ্রী। আপনি কোথায় আছেন?"
--"ধুপখোলা মাঠটা আছে না? মাঠে বসে আছি। আসবেন নাকি?"
--"আপনি একটু বসুন, আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছি।"
আমাদের বাসা থেকে ধুপখোলা মাঠ চার-পাঁচ মিনিটের পথ। গেট থেকে বের হয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। এরমধ্যে বেশ কয়েকবার অহনাকে ফোন করলাম, অহনা এখনো ফোন বন্ধ করে রেখেছে।
ফিরোজ ভাই মাঠে ফুচকার দোকানের একটা চেয়ারে বসে আছে। আমি গিয়ে ফিরোজ ভায়ের পাশে বসলাম।
ফিরোজ ভাই হাসিহাসি মুখ করে বললেন,
"কি অবস্থা নিবিড় ভাই? কেমন আছেন?"
আমি চিন্তা করছি, উদ্ভট এসব কর্মকান্ড সম্পর্কে ফিরোজ ভাইকে কিছু বলব কিনা। ফিরোজ ভাইকে বলা যায়, মানুষ হিসেবে তাকে আমার কখনো খারাপ লাগে নি।
--"কি ব্যাপার ভাই কি নিয়ে এতো চিন্তা করতেছেন?"
--"নাহ ভাই তেমন কিছু না।"
--"বিয়ের ব্যাপার চিন্তা না হয়ে উপায় আছে? তা ভাই ফুচকা খান। আমিতো স্বার্থপরের মতো একা একা খেয়ে ফেলেছি।"
--"ফুচকা খাবনা ভাই। চলুন চা খাই।"
ফুচকার দোকান থেকে উঠে দুইকাপ চা খেয়ে আমরা মাঠের উত্তর দিকে গিয়ে বসলাম।
চারিদিকে গুমোট অন্ধকার, কোত্থেকে যেনো গাঁজার গন্ধ আসছে। বিশ্রী অবস্থা।
ফিরোজ ভাই বিরক্ত গলায় বললেন,
"কোথাও বসে শান্তি নাই ভাই, কোন হালায় যেনো গাঁজা ধরিয়েছে। বুঝতে পারছেন?"
--"হ্যাঁ, এই মাঠের এটাই সমস্যা। চলুন দক্ষিণ দিকে গিয়ে বসি।"
হাঁটতে হাঁটতে ফিরোজ ভাই বললেন,
"সব এরেঞ্জমেন্ট কমপ্লিট?"
--"মোটামুটি।"
মাঠের দক্ষিণে গিয়ে বসে ফিরোজ ভাই একটা সিগারেট ধরিয়ে, সিগারেটের প্যাকেট-লাইটার আমার দিকে এগিয়ে দিলেন। আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে বললাম,
"ফিরোজ ভাই বড় ধরনের একটা সমস্যার মধ্যে পড়েছি।"
ফিরোজ ভাই চিন্তিত মুখে বললেন,
"কি সমস্যা?"
--"ভাই কে যেন চাচ্ছে অহনার সাথে বিয়েটা আমার ভেঙে যাক। বিশ্রী ধরনের কর্মকাণ্ড করছে।"
--"কেমন?"
--"তানিয়া নামে একজন আমাকে চিঠি পাঠিয়েছে বাসার ঠিকানায়, চিঠিতে লিখেছে তাঁর সাথে নাকি আমার বিয়ে হয়েছে, সেই ঘরে আমার আড়াই বছরের একটা ছেলেও আছে। ছেলের ছবি পর্যন্ত পাঠিয়েছে।"
--"কেউ ফাজলামি করতেছে।"
--"না ভাই এটা ফাজলামি না, সে অহনাদের বাসাতেও পার্সেল পাঠিয়েছে।"
--"বলেন কী?"
--"কি পাঠিয়েছে জানেন? ফটোশপ করা আমার সাথে এক মেয়ের স্পর্শকাতর ছবি।"
--"সর্বনাশ!"
--"সে বলছে, তাঁর সাথে মৌখিকভাবে আমার বিয়ে হয়েছে, আমি যেন তাকে মৌখিকভাবেই ডিভোর্স করি, কিন্তু তাঁর সাথে যোগাযোগ করার কোন উপায় রাখেনি। ফোন নম্বর দিয়েছে, সেই ফোন নম্বর বন্ধ। ঠিকানা দিয়েছে, সেই ঠিকানা ভুল।"
--"ফোন নম্বর কোন কোম্পানির?"
--"বাংলালিংক।"
--"ফোন নম্বরটা দিন তো, আমার এক ছোটভাই আছে বাংলালিংকে, ওকে নম্বর দিলেই খোঁজ পাওয়া যাবে।"
আমি ফোন নম্বর দিয়ে বললাম,
"ফিরোজ ভাই, বিয়ের বাকি মাত্র কয়দিন, আজ বিকেলে অহনার বাবা তাদের বাসায় ডেকে আমাকে বলেছে বিয়ে ক্যান্সেল। ব্যাপারটা বুঝতে পারছেন?"
ফিরোজ ভাই অবিশ্বাসের চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
"কি বলেন! এটা কি কোন তামাশা?"
--"কিছু বুঝতে পারছি না, কি করব বলুনতো?"
--"আপনি শ্বশুড়বাড়িতে কথা বলুন, পুরো ব্যাপারটা খুলে বলুন।"
--"সেই চেষ্টাই করছিলাম, অহনা ফোন বন্ধ করে রেখেছে।"
--"দেখা করুন। দেখা করে বুঝিয়ে বলুন।"
ফিরোজ ভাই তানিয়াকে খুঁজে বের করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করে চলে গেলেন। আমি বাড়ি ফিরলাম রাত সাড়ে দশটায়।
অহনার বান্ধবী দিপা। দিপার সাথে আমার ফেসবুকে কানেক্ট আছে। দিপার ফোন নম্বর আমার কাছে নেই। ম্যাসেঞ্জারে অবশ্য দিপা তাঁর ফোন নম্বর দিয়ে বলেছিল, প্রয়োজন হলে যেন ফোন করি। চ্যাটবক্স ঘেটে ফোন নম্বর বের করে দিপাকে ফোন করলাম।
রিং বাজতেই দিপা ফোন ধরে বলল,
"কেমন আছেন ভাইয়া?"
আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
"আমাকে কি চিনতে পেরেছেন?"
--"ওমা চিনব না কেন!"
--"আচ্ছা, একটা সমস্যায় পড়ে ফোন দিয়েছি। অহনার সাথে কথা বলা খুব দরকার। কিন্তু সে ফোন বন্ধ করে রেখেছে। ছোটখাটো একটা ঝামেলা হয়েছে একটু কষ্ট করে অহনাকে ফোনটা অন করতে বলবেন প্লীজ!"
--"আচ্ছা এখুনি বলছি। কি সমস্যা হয়েছে ভাইয়া বলা যাবে?"
আমি পুরো ঘটনা খুলে বললাম। দিপা বলল,
"কে এমন করবে? আপনার কোন বান্ধবী নয়তো? যে আপনাকে পছন্দ করে?"
--"আমার কোন মেয়ে বন্ধু নেই।"
--"তাহলে তো সমস্যা। আচ্ছা অহনাকে আমি এক্ষুনি বলছি আপনাকে ফোন দিতে।"
রাত সাড়ে এগারোটা বাজে। আমি ছাদে বসে আছি। মাথাটা আউলে আছে। এখনো হয়তো অহনার বাবার সাথে বাবার কথা হয়নি। বাবা-মা যদি ঘটনাটা জানতে পারে তাহলে কি অবস্থা হবে?
অহনা ফোন করল রাত পৌনে বারোটায়। আমি ফোন ধরতেই, গম্ভীর গলায় বলল,
"কি বলবেন? তাড়াতাড়ি বলুন।"
আমি কোমলগলায় বললাম,
"আপনার কি বিশ্বাস হয়, আমার সাথে এরকম কারও সম্পর্ক ছিল?"
অহনা চাপা গলায় বলল,
"বিশ্বাস না হওয়ার কি আছে?"
--"ছবিগুলোর জন্য বলছেন?"
--"শুনুন আপনাদের পুরুষদের দিয়ে না সবকিছু সম্ভব।"
--"ছবিগুলো ফটোশপ করা, বিশ্বাস করুন তানিয়া নামের কাউকে আমি চিনি না, এরকম সম্পর্ক তো দূরে থাক।"
--"সম্পর্ক না থাকলে সে এরকম কথা বলবে কেন? কি বিশ্রী ছবি পাঠিয়েছে ছি!"
--"চিঠিটা আপনি পড়েছেন?"
--"আমার এতো দরকার নাই।"
--"দেখুন অহনা, যে এসব করছে, সে কিন্তু আপনার সম্পর্কেও খুব ভাল জানে। চিঠিতে সে সুমনের কথা বলেছে। সে চাচ্ছে না, আমাদের বিয়েটা হোক।"
--"তো আমার কি করার আছে?"
--"সুমন কি কোনভাবে এসবের সাথে জড়িত?"
--"সুমন কেন এসব করবে? বিয়ে করে সংসার করছে। সুমনের সাথে আমার গা-ছাড়া সম্পর্ক ছিল না, সেটা আপনাকে আমি আগেই বলেছি। আমাদের মিউচুয়ালি ব্রেকাপ হয়েছে।"
--"আপনি কাল আমার সাথে একটু দেখা করবেন প্লীজ।"
--"আমি পারব না।"
--"দেখুন অহনা, আমার আপনার সহযোগিতা প্রয়োজন, বিয়ে নাহয় আমাকে আপনি নাই করলেন কিন্তু যেই কলঙ্কের ছাপ পড়েছে, তা থেকে আমাকে মুক্ত হতে দিন। নইলে বাকিটা জীবন মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারব না, প্লীজ।"
--"ঠিক আছে কাল আমি দুপুরের দিকে আমি জিগাতলা যাবো। আপনি বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ব্যাচেলর পয়েন্টে থাকবেন।"
--"থ্যাংক ইউ।"
অহনার সাথে কথা বলে চিন্তার ভার কিছুটা কমেছে। এই চিন্তার মধ্যেও ভাবছি, আগামীকাল কি ড্রেস পরে যাবো। নীল পাঞ্জাবীর সাথে জিন্স? নাকি সাদা ফতুয়াটার সাথে কালো জিন্স?
আকাশে মেঘ জমেছে। বিষন্ন মেঘেরা গুরুম গুরুম শব্দে আর্তনাদ করছে, কিন্ত বৃষ্টি নামছে না। রাত একটার দিকে ঘরে ফিরে বাতি নিভিয়ে দিয়ে আমি শুয়ে পড়লাম।
...
#
#বহুরূপী, পর্ব- ০৩
...
দুপুরের কড়া রোদে সাদা ফতুয়া কালো জিন্স পরে বের হয়েছি। হাতে একটা কালো ফিতার ক্যাসিয়ো ঘড়ি। হাতাগুলোতে ছোট করে দুইটা ভাজ দিয়ে রেখেছি।
ব্যাচেলর পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছি বিকেল চারটায়। জায়গার নাম ব্যাচেলর পয়েন্ট হলেও এখানে শুধু ব্যাচেলরদের আড্ডা না, বিবাহিত-অবিবাহিত সবারই এখানে আড্ডাবাজি চলে৷ আড্ডামঞ্চের সামনে একটা রেলিং। রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে দুজন লেকের দিকে তাকিয়ে আছে। রেলিংয়ের নিচ থেকে ধানমন্ডি লেক বয়ে চলে গেছে রবীন্দ্র সরোবরের দিকে। চিশতিয়া প্যালেসের (Chistia Palace) সামনে কয়টা ছেলে লেকের জলে লাফঝাঁপ করছে। চিশতিয়া প্যালেসকে অনেকেই মন্দির-গির্জা মনে করে থাকে। মূলত এটা একটা বাড়ি। বাড়ির মালিক শেরে খাজা সাহেব বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত একজন ব্যক্তি ছিলেন।
ঘড়ির কাটা সাড়ে চারটা ছুই ছুই করছে। আমি অহনাকে ফোন করলাম। অহনা ফোন ধরে বলল,
"আপনি চলে আসছেন?"
--"হ্যাঁ, আমি ব্যাচেলর পয়েন্টে বসে আছি।"
--"আমার পাঁচমিনিট লাগবে। আপনি বসুন, আমি আসছি।"
পাঁচজন ছেলে-মেয়ে বসে গিটার বাজাচ্ছে। শুনতে ভাল লাগছে। পথচারিরা উৎসুক চোখে তাদের দিকে তাকাচ্ছে। ব্যাপারটা তারাও উপভোগ করছে।
অহনা পাঁচমিনিটের কথা বলে আসল আধাঘন্টা পরে। আমি মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাঁর দিকে তাকালাম। মনে মনে নীল রঙের পাঞ্জাবী পরে না আসায় আফসোস হলো। অহনা নীল রঙের শাড়ি পরে এসেছে। ঠোঁটে গোলাপি রঙের লিপস্টিক, হাতে টিয়া-খয়েরী রঙের কয়েকজোড়া কাঁচের চুড়ি, কপালে পেস্ট রঙের ছোট টিপ, গলায় সুন্দর একটা কাঠ খোঁদাই অলংকার৷ অহনাকে দেখাচ্ছে অপ্সরীর মতো।
অহনা দুঃখিত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
"স্যরি, আমার দেরি হয়ে গেল।"
এররকম কারও জন্য সারাজীবনও অপেক্ষা করা যায়। আমি স্মিত হেসে বললাম,
"সমস্যা নেই। এখানে বসবেন, নাকি রবীন্দ্র সরোবরের দিকে যাবেন?"
--"এখানেই বসি। ঐদিকটায় অনেক মানুষের ভীড় থাকে।"
--"তা ঠিক।"
--"আপনি বসুন, আমি আসছি।"
দুই প্লেট ফুচকা অর্ডার করে অহনা এসে আমার পাশে বসে বলল,
"এবার বলুন, কি সহযোগিতা করতে হবে?"
আমি ইনভেলাপে করে ছবি নিয়ে এসেছি। অহনাকে ইনভেলাপ দিয়ে বললাম,
"ছবিগুলো একটু দেখুন।"
অহনা ভুরু কুঁচকে বলল,
"আমি এসব ছবি দেখতে চাচ্ছি না।"
--"না দেখলে তো ব্যাপার টা বুঝবেন না। ছবিগুলো দেখুন।"
অহনা ইনভেলাপ খুলে ছবির দিকে তাকিয়ে নাক সিটকালো। আমি বললাম,
"ভাল ভাবে লক্ষ্য করুন, একটা ছবিতেও মেয়ের মুখ বোঝা যাচ্ছে না, ব্লার এফেক্ট ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু আমাকে দেখুন, স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে।"
--"সে হয়তো তাঁর চেহারা দেখাতে চাচ্ছে না। এটাই স্বাভাবিক। একজন নারী তাঁর বস্ত্রহীন ছবি সবাইকে দেখিয়ে বেড়াতে পারে না।"
--"আপনার কথা ঠিক আছে, কিন্তু এখানে কিঞ্চিৎ সমস্যা আছে। সে প্রমাণস্বরূপ ছবিগুলো আপনাদের বাসায় পাঠিয়েছে, তাঁর মুখই যদি বোঝা না গেল, তাহলে এ-থেকে কি প্রমাণ হয়? এরকম ছবি তো ইচ্ছা করলে আপনিও ফটোশপে বানিয়ে ফেলতে পারবেন। একটু কষ্ট করলে এর থেকেও নিখুঁতভাবে পারবেন।"
--"কেউ যদি এরকমটা করেই থাকে তবে কেন করবে? বিয়ে ভেঙে তার লাভ কী?"
--"লাভ-লসের বিষয়টা এখনো জানি না। তবে আছে একটা বিষয়, যেই কারণে কেউ একজন চাচ্ছে না আপনার সাথে আমার বিয়ে হোক।"
ফুচকা হয়ে গেছে। অহনা গিয়ে ফুচকা নিয়ে এসে একটা প্লেট আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, নিন ফুচকা খান।
আমি প্লেট নিয়ে বললাম,
"আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, আপনাদের বাসায় যে কুরিয়ার করেছে, সে আমাদের বাসাতেও কুরিয়ার করেছে, চিঠি পাঠিয়েছে। সে যেই ফোন নম্বর দিয়েছে সেটা ভুল। আমি আমার অফিসের কলিগ ফিরোজ ভাইকে দিয়ে খোঁজ নিয়েছি। এই নম্বরের কোন সীমই বিক্রি হয়নি। দ্বিতীয়ত, সে যেই ঠিকানা চিঠিতে ব্যবহার করেছে, সেই ঠিকানাটাও ভুয়া।"
--"কে এরকম করছে?"
--"আমার ধারণা, সে আপনার-আমার দুজনের সম্পর্কেই অনেক খোঁজ-খবর রাখে। দুজনের সম্পর্কেই খুব ভাল জানে। না জানলে আমার নতুন বাড়ির ঠিকানা জানল কি করে? আর আপনার সাথে সুমনের সম্পর্কেই বা জানল কি করে?"
--"হতে পারে।"
--"বাসার কি অবস্থা বলুন তো?"
--"বাসায় এসব নিয়ে তেমন আলোচনা হচ্ছে না। বাবা চুপচাপ আছেন।"
--"তিনি তো বাবার ফোন ধরছেন না। একবার ভাবুন তো, অনুষ্ঠানের সব এরেঞ্জমেন্ট হয়ে গেছে, এমন সময় বাবা-মা যদি এসব শুনে তাহলে তাদের কি অবস্থা হবে? দুই পরিবারের কথাই ভাবুন।"
--"আমাকে কি করতে বলছেন?"
--"আপনি শুধু আমার সাথে থাকুন। বাসার ব্যাপারটা একটু সামলান।"
--"দেখছি কি করা যায়।"
আমরা ব্যাচেলর পয়েন্ট থেকে উঠলাম সন্ধ্যার আগে আগে। অহনা বলল,
"একই রাস্তা দিয়েই তো যাবো, চলুন একসাথে যাই।"
আমার মনের কথাটাই অহনা বলে দিয়েছে। আমার বাড়ির পথ যদি পুরোপুরি উলটোদিকেও হতো তারপরও আমি চাইতাম, অহনার সাথে যেতে। এই উটকো ঝামেলার কারণেই কিছু বলতে মন সায় দিচ্ছে না।
আজিমপুর কলোনি পর্যন্ত একটা রিক্সা ঠিক করে আমরা দুজন রিক্সায় উঠে পরলাম।
অহনা হুট করে বলল,
"আপনাকে ফতুয়াতে সুন্দর লাগছে।"
আমার কেমন যেন লজ্জা লাগল। মৃদু গলায় বললাম,
"আপনাকে অহনার মতো সুন্দর লাগছে।"
--"সেটা আবার কে? কোন নায়িকা নাকি মডেল?"
আমি স্মিত হেসে বললেন,
"আমার পাশে যিনি বসে আছেন তিনি।"
অহনা শব্দ করে হেসে ফেলল...
ফিরোজ ভায়ের সাথে দেখা করে, বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত আটটা বেজে গেছে। কাকাতো দুই ভাই বাসায় চলে এসেছে। তাঁরা আগে থেকেই বলেছে, আলপনা, হলুদ মঞ্চ তাঁরা সাজাবে। এরা দুজন জমজ ভাই। দুজন দেখতে অনেকটা একই রকম। হুট করে দেখলে কে কোনটা বোঝা যায় না। এদেরকে বিয়ে দেবার পর এদের বউ পড়বে মহা যন্ত্রণায়, কে কোনটা চট করে চিনতে পারবে না।
দুজনের চেহারার মিলের কারণে চাচা তাদের নামও মিলিয়ে রেখেছেন- রিফাত-সিফাত।
বাসায় এসে নিজের ঘরে ঢুকতেই দুই ভাই এসে ঘরে ঢুকল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
"কিরে কিছু বলবি?"
দুজন একসাথে বলল,
"ভাইয়া টাকা দাও।"
--"কিসের টাকা?"
--"আশ্চর্য শপিং করব না?"
--"বাবার কাছ থেকে নে গিয়ে।"
--"কাকার কাছে চাইতে পারব না। তুমি দাও। নইলে কাকার কাছ থেকে নিয়ে দাও।"
দুই হাজার টাকা বের করে দিলাম। দুইভাই বলল,
"এই টাকা দিয়ে কি হবে? একটা প্যান্টও তো পাওয়া যাবে না।"
--"অনেক দিয়ে ফেলছি, এখন যা।"
--"আরও দাও।"
--"আর নাই।"
--"এতো কিপ্টামি করতেছ কেন? বিয়ে কি বার বার করবা?"
পকেট থেকে আরও একহাজার টাকা বের করে দিয়ে বললাম,
"এবার যা।"
দুইভাই আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
"আরও তিন দাও।"
আমি রাগ রাগ গলায় বললাম,
"বেয়াদ্দপ, যাতো। অনেক দিছি।"
দুইভাই আবারও আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
"এই টাকা দিয়ে তো দুইজনের হবে না। একজন কিনব, আরেকজন কিছু কিনব না?"
--"আর সর্বোচ্চ এক দেবো, হবে?"
দুজন মাথা চুলকে বলল,
"আচ্ছা দাও।"
আমি এক হাজার টাকা দেবার পর তাঁরা দুজন দরজার সামনে গিয়ে হাসতে হাসতে বলল,
"আগে থেকেই জানতাম, টাকা নিয়ে ঝামেলা করবা, সেজন্য কাকা-কাকীর কাছ থেকে ছয় হাজার অগ্রীম নিয়ে নিছি।"
আমি গম্ভীরমুখে বললাম,
"দাঁড়া!"
দুজনকে ধরতে দরজা পর্যন্ত যাবার আগেই তাঁরা পগারপার হয়ে গেল। তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া গেল না।
রাতে খাবার টেবিলে বসে বাবা বললেন,
"কিরে বেয়ান সাহেবের ফোনে ফোন ঢুকতেছে না কেন?"
আমার ধারণা তিনি বাবার ফোন নম্বর ব্লক করে রেখেছেন। আমি বললাম,
"তোমার কাছে অহনার ফোন নম্বর নাই?"
--"না। অহনার নম্বর টা সেভ করে দেতো। আর খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ফোনে ধরিয়ে দিস তো।"
--"আচ্ছা।"
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে, বাবাকে ফোনে অহনাকে ধরিয়ে দিয়ে ঘরে ঢুকলাম।
কিছুক্ষণ পর অহনা ফোন করল। আমি ফোন ধরে জিজ্ঞাসা করলাম,
"বাবার সাথে কথা হলো?"
--"হ্যাঁ।"
--"বাবা কি বলল?"
--"কেমন আছি না আছি, বাবার সাথে কথা বলতে চাইছিলেন।"
--"কথা বলিয়ে দিলেন?"
--"নাহ, আমি একটা মিথ্যা কথা বলেছি।"
--"কেমন?"
--"আমি জানি বাবা ভীষণ রেগে আছে। বাবাকে দিলে বাবা রাগারাগি করবে৷ সেজন্য বলেছি বাবা গ্রামে আত্নীয়-স্বজনদের দাওয়াত করতে গেছে।"
--"বাঁচিয়েছেন আমাকে, কথা হলে কি যে হতো, ভাবতে পারছি না।।"
--"আচ্ছা, কাউকে কি আপনার সন্দেহ হচ্ছে?"
--"এটাইতো সমস্যা কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না।"
--"আপনার কোন বন্ধু না তো?"
--"আমার বন্ধুদের এমন করার কথা না, তারপরও তাদের সাথে আমি কথা বলেছি, তাঁরা কেউ করেনি। আর তাছাড়া, ওরা সুমনের ব্যাপারটা জানবে কি করে? সুমনের সম্পর্কে জানতে হলে, আপনার সাথে তাদের পরিচয় থাকতে হবে।"
--"বিপরীতও তো হতে পারে। আমার পরিচিত না হয়ে সুমনেরও তো পরিচিত হতে পারে।"
--"তাও ঠিক।"
--"একটা কাজ করুন না, আপনার বন্ধুদের ছবি আমাকে ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দিন, দেখি কাউকে চিনি কিনা।"
আমি ফোন রেখে বন্ধুদের ছবি অহনাকে ইনবক্স করলাম। দিপার কয়েকটা ম্যাসেজ এসেছে। ঝামেলা কি হলো না হলো এসব জানতে চেয়ে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে। আমি রিপ্লাই করলাম, সমস্যা এখনো চলছে।
ছবি দেখা শেষ করে অহনা ফোন করে বলল,
"কাউকেই তো চিনি না। আগে দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না। আচ্ছা একটা কথা বলি?"
--"বলুন।"
--"আমার কেন যেন মনে হচ্ছে এসবের পেছনে সুমনের হাত আছে। কয়েকদিন আগে ও চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসছে।"
--"আপনি না বলেছিলেন, তাঁর সাথে আপনার মিউচুয়ালি ব্রেকাপ হয়েছে।"
--"তা হয়েছে, কিন্তু আমার পক্ষ থেকে ব্রেকাপের কারণ ছিল যদিও আমি সেটা প্রকাশ করিনি।"
--"কারণ কি?"
--"ও আমাকে দীর্ঘদিন ওর বেড পার্টনার বানানোর চেষ্টা করেছে। ওকে সন্দেহ করার আরেকটা কারণ হচ্ছে- ওর সাথে যখন আমার সম্পর্ক ছিল, ও প্রায়ই বলত, আমাকে ছাড়া অন্যকাউকে বিয়ে করলে সারাজীবন জ্বালিয়ে মারব। কোনভাবে সুমনই এসব করছে নাতো?"
--"আমি বুঝতে পারছি না।"
--"আমিকি সুমনকে, কিছু জিজ্ঞাসা করব?"
--"আমার মনে হয় না, জিজ্ঞাসা করে কোন লাভ হবে, সে এরকম করে থাকলে কখনোই স্বীকার করবে না।"
--"এখন তাহলে কি করা যায়?"
--"আমি ভাবছি। আপনিও ভাবুন। বিয়ের আছে ছয়দিন। দুই তিনদিনের মধ্যে পারিবারিক ভাবে আপনাদের বাড়ির সাথে আমাদের বাড়ির যোগাযোগ হবে। এর আগেই তাকে খুঁজে বের করতে হবে।"
--"হু।"
অহনার সাথে কথা বলে, মনিরের চায়ের দোকানে গেলাম। বন্ধুরা সবাই আড্ডা দিচ্ছে। চায়ের দোকানের পাশে একটা ক্যারামবোর্ড আছে। চারজন ক্যারাম খেলছে, বাকিরা চা-সিগারেট খাচ্ছে।
সবাইকে ডেকে পুরো ঘটনা খুলে বললাম। বন্ধুদের কেউ বলল, থানায় অভিযোগ দিতে। কেউ বলল, তোদের পরিচিত কেউ ফাজলামো করছে।
রাত প্রায় একটা পর্যন্ত মনিরের চায়ের দোকানে বসে থেকে বাড়ি ফিরলাম৷
বারান্দায় বসে একটার পর একটা সিগারেট ধরাচ্ছি আর ভাবছি। এ-যাবৎকাল যত মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে সবার কথা ভাবছি। এমন কাউকে খুঁজে পাচ্ছি না, যে এরকম উদ্ভট কর্মকান্ড করতে পারে। ঘটনাটা এমন হতে পারে, কেউ অহনাকে প্রস্তাব পাঠিয়ে ব্যর্থ হয়ে ক্ষোভে এসব করছে, কিন্তু কে সে? সুমন নাকি অন্য কেউ?
সুমনের ব্যাপারে সকালে খোঁজ-খবর নিবো ভেবে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
সকালে বাবা ঘুম থেকে ডেকে তুলে বললেন,
"তোর অফিসের সবাইকে কার্ড দিয়েছিস?"
আমি বিছানায় উঠে বসতে বসতে বললাম,
"না এখনো দেওয়া হয়নি।"
--"এখনো দেসনাই কেন? এতো দেরি করলে চলে? সবারই তো ব্যস্ততা থাকে। মুখ-হাত ধুয়ে, নাস্তা করে অফিসে গিয়ে কার্ড দিয়ে আয়।"
বাবা ঘর থেকে বের হবার পর, হাত-মুখ ধুয়ে কাপড় বদলে নাস্তা করে কার্ড নিয়ে বাসা থেকে বের হলাম।
রাস্তায় গাড়িতে বসে অহনাকে ফোন দিয়ে সুমনের ফোন নম্বর, ফেসবুক আইডি দিতে বললাম।
অফিসের সবাইকে কার্ড দিয়ে রাকিবকে বললাম,
"এক কাপ কফি খাওয়াবে রাকিব?"
রাকিব হাসিমুখে বলল,
"ভাইয়া বসেন। নিয়ে আসছি।"
কিছুক্ষণের মধ্যে রাকিব কফি বানিয়ে নিয়ে এলো। কফির কাপ শেষ করে আমি অফিস থেকে বের হয়ে গেলাম।
...
#
#চলবে
লেখা- নাহিদ হাসান নিবিড়
বিঃদ্রঃ আগামী পর্বে গল্পটি শেষ হবে।
Nahid Hasan Nibir - নাহিদ হাসান নিবিড়
0 Comments
💬✨ মন্তব্য করার নিয়মাবলী ✨💬
🙏😊 দয়া করে ভদ্র ভাষায় মন্তব্য করুন।
🚫❌ অপ্রাসঙ্গিক বা স্প্যাম মন্তব্য প্রকাশ করা হবে না।
💡💖 আপনার মতামত আমাদের জন্য খুবই মূল্যবান।
📚✍️ গল্প নিয়ে আপনার চিন্তা, অনুভূতি বা প্রস্তাব লিখে জানাতে পারেন।
🌟🌍 চলুন আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করি।
ধন্যবাদ! 💝🌸🎉